নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় পাঁকা ইউনিয়নে চুরির চেষ্টার অভিযোগ এনে তিন শিশুকে রশি দিয়ে বেঁধে লাঠিপেটা করার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় বাজার কমিটির সভাপতি ইমাজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরে নির্যাতি এক শিশুর বাবা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। নির্যাতিত দুই শিশু বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) তৈয়ব আলী জানান, নির্যাতনের শি শিশু ফিরোজের বাবা সিদ্দিক বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত ইমাজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের মাকুপাড়া বাজারের একটি দোকানে চুরি চেষ্টার অভিযোগ এনে রহমান মার্কেটের পিছন থেকে পাঁকা গ্রামের রমজানের ছেলে ও পাঁকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র রুমনকে আটক করে বাজার কমিটি। আটকের পরে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। পরে চুরি করার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে মাকুপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে ও আইডিয়াল স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী এবং একই গ্রামের সিদ্দিকের ছেলে ও মাকুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্র ফিরোজকেও আটক করা হয়।পরে শুক্রবার বিকালে মাকুপাড়া বাজার কমিটির উদ্যোগে মাকুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক শালিসি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে চোর সন্দেহে আটক তিন শিশুকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক লাঠি দিয়ে পেটান ওই বাজার কমিটির সভাপতি ইমাজ এবং সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান পিয়া। এ সময় তারা রুমনকে ৫ হাজার, মেহেদীকে ৫ হাজার এবং ফিরোজকে ২ হাজার টাকা অর্থদ- করে। শালিস শেষে ওই রাতেই শিশু ফিরোজকে এবং পরের দিন মেহেদীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মেহেদী হাসানের মা আসমা বেগম শনিবার প্রতিবেদককে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি তার ছেলেকে নিয়ে টিভি দেখার পর একসাথে ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে বাজার কমিটির লোকজন তার ছেলেকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তাকে চুরির অভিযোগে বেধড়ক মারপিট করা হয়। মারের হাত থেকে ছেলেকে বাঁচানোর জন্য তিনি বাজারের চা-দোকানি নজরুলকে ৫শ টাকা দিয়েছিলেন। এরপরও তার ছেলেকে আরও ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মন্তব্য লিখুন